Header Ads

হিসাববিজ্ঞান ১ম পত্র: ৪র্থ অধ্যায় প্রশ্নের উত্তর (PDF)

 



হিসাববিজ্ঞান ১ম পত্র ৪র্থ অধ্যায় প্রশ্নের উত্তর : হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা নিরুপনের জন্য যে বিবরণী প্রস্তুত করা হয় তাকে রেওয়ামিল বলে। রেওয়ামিল হিসাব চক্রের ৪র্থ ধাপ। তবে এটি হিসাবের কোন অপরিহার্য অঙ্গ নয়। কারণ রেওয়ামিল ছাড়াও খতিয়ানের জের হতে আর্থিক বিবরণীসমূহ প্রস্তুত করা যায়।

Weygand Kieso and Kimmel এর মতে ‘ A :rial balanlnce is a list of accounting and their balances as a given time. অথ্যাৎ কোন একটি সময়ে প্রদত্ত হিসাব এবং এদের উদ্বৃত্তের তালিকাকে রেওয়ামিল বলা হয়।

হিসাববিজ্ঞান ১ম পত্র ৪র্থ অধ্যায় প্রশ্নের উত্তর

হিসাবসমূহের ডেবিট ও ক্রেডিট জেরের সমতা বিধানকারী প্রমানপত্রকে রেওয়ামিল বলা হয়। সুতরাং বলা যায় হিসাবের গাণিতিকি শুদ্ধতা যাচাইয়ের জন্য ও আর্থিক বিবরণীকে সহজতর করার লক্ষ্য খতিয়ানের ডেবিট ও ক্রেডিট উদ্বৃত্তগুলো পাশাপাশি সাজিয়ে যে বিবরণী প্রস্তত করা হয় তাকে রেওয়ামিল বলে।

রেওয়ামিলের বৈশিষ্ট্য:

গাণিতিক শুদ্ধতা পরীক্ষার উদ্দেশ্যে খতিয়ানভুক্ত বিভিন্ন হিসাবের ডেবিট এবং ক্রেডিট উদ্বৃত্তের তালিকাকে রেওয়ামি বলাহয়। রেওয়ামিল হতে হিসাবের গানিতিক শুদ্ধতা জানা যায় এবং আর্থিক বিবরণসমূহ প্রস্ততুকরণের কাজ সহজ হয়। নিম্নে রেওয়ামিলের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হল:

১. নিদিষ্ট তারিখ: হিসাবকালের শেষ দিনে রেওয়ামিল তৈরি করা হয়।
২. হিসাবের অংশ নয়: রেওয়ামিল কোন হিসাব নয় বা হিসাবের কোন অংশও নয়। এটি খতিয়ানের ডেবিট ও ক্রেডিট জেরের একটি তালিকা মাত্র।

৩. বাধ্যবাধকতা: রেওয়ামিল তৈরির কোন বাধ্যবাধতা নেই। এটি প্রস্তুত করা হলে অন্যান্য সুবিধা ভোগ করা যায় বলে এটি প্রস্তুত করা হয়ে থাকে।

৪. গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই: খতিয়ানভুক্ত হিসাবসমূহ সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে কিনা রেওয়ামিল প্রস্তুতের মাধ্যমে তা জানা যায়।

৫. সমন্বয়: এটি খতিয়ান ও আর্থিক বিবরণী মধ্যে সমন্বয় সাধান করে থাকে।
৬. পৃথক কাগজে প্রস্তত: রেওয়ামিল পৃথক কাগজে প্রস্তুত করা হয়। এর জন্য কোন হিসাবের বই সংরক্ষণ করা হয় না।

৭. আর্থিক অবস্থা: কারবারের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়ার জন্য রেওয়ামিল থেকে বিভিন্ন হিসাব খাতের উদ্বৃত্ত নেয়া হয়।

৮. সকল প্রকার হিসাব: রেওয়ামিল মুলধন ও মুনাফা জাতীয় সব ধরনের হিসাব অন্তুর্ভূক্ত করা হয়।
৯. ধারাবাহিক বিবরণী: এটি খতিয়ানভুক্ত হিসাবসমূহের ধারাবাহিক বিবরণী। অর্থাৎ এতে খতিয়ানভূক্ত হিসাবসমূহের ধারাবাহিক বিবরণী। অর্থাৎ এতে খতিয়ানভুক্ত হিসাবসমূহের উদ্বৃত্তলিপিবদ্ধ করা হয়।

রেওয়ামিলের উদ্দেশ্য:

রেওয়ামিল হিসাবের কোন অংশ নয় এবং অপরিহার্য বিষয়ও নয় তথাপি প্রতিটি কারবার প্রতিষ্ঠানই চুড়ান্ত হিসাব। প্রস্তুতের পূর্বে রেওয়ামিল তৈরি করে। যেসব উদ্দেশ্যের সামনে রেখে রেওয়ামিল তৈরি করা হয় তা নিম্নে আলোচনা করা হল:

১। দু তরফা দাখিলা পদ্ধতির প্রয়োগ: দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির নীতি অনুযায়ী প্রতিটি লেনদেনকে ডেবিট ও ক্রেডিট হিসাবখাতে সমান অংকে লিপিবদ্ধ করা হয়। যেহেতু প্রতিটি লেনদেন সমপরিমান টাকায় ডেবিট ও ক্রেডিট তহিসাবখাতে লিপিবদ্ধ করা হয় সেহেতু একটি সময়াস্তে নিদির্ষ্ট তারিখে ডেবিট ও ক্রেডিট ব্যালেন্সগুলোর যোগফলও সমান হয়। রেওয়ামিলের ডেবিট ও ক্রেডিট কলামের যোগফল সমান হলে দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির প্রয়োগ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।

২। হিসাবের গাণিতিক নির্ভূলতা যাচাই: রেওয়ামিল প্রসৃÍতের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো হিসাবের গাণিতিক নির্ভূলতা পরীক্ষা করা। সাধারণত চুড়ান্ত হিসাব তৈরির পূর্বে রেওয়ামিল তৈরি করা হয় । কারণ হিসাবে কোন ভুল থাকলে চুড়ান্ত হিসাবেও তা প্রতিফলিত হবে। ফলে চুড়ান্ত হিসাব তৈরির পূর্বেই হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই করা প্রয়োজন। রেওয়ামিলের ডেবিট ও ক্রেডিট কলামের যোগফল সমান হলে ধরে নেয়া হয় যে হিসাবগুলো গাণিতিকভাবে নির্ভূল।

৩। চুড়ান্ত হিসাব প্রণয়নে সহায়তা: খতিয়ানের সকর হিসাবের জের নিয়েই নিদির্ষ্ট সময়াস্তে ক্রয় বিক্রয় হিসাব লাভ ক্ষতি হিসাব এবং উদ্বৃত্তপত্র তৈরি করা হয়। রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হলে অতি সহজে এবং একত্রে খতিয়ানস্থ হিসাব সমূহের জের পাওয়ায়ায় ফলে চুড়ান্ত হিসাব প্রণয়ন সহজতর হয়।

৪। শ্রম ও সময়ের অপচয় হ্রাস: রেওয়ামিল প্রস্তুত করা না হলে চুড়ান্ত হিসাব প্রণয়নের জন্য খতিয়ানের প্রতিটি হিসাব থেকে খুজে জের নিতে হয় যা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ। অতএব রেওয়ামিল প্রস্তত করা হলে খতিয়ানের সকর হিসাবের জের এক জায়গায় পাওয় যায় ফলে সময় বাচে ও শ্রমের লাঘব হয়।

৫। সহজে ভুল নির্ণয়: রেওয়ামিল প্রস্তুতের মাধ্যমে খতিয়ান হিসাবে কোন ভুল আছে কিনা তা সহজেই নির্ণয় করা যায। হিসাবের ভুল নির্ণয় করে তা সংশোধন করা রেওয়ামিল প্রস্তুতের অন্যতম উদ্দেশ্য।

৬। তুলনামুলক বিশ্লেষণ: একাধিক হিসাবকালের রেওয়ামিল পাশাপাশি উপস্থাপন করলে বিভিন্ন সময়ের জেরের মধ্যে তুলনামুলক চিত্র পাওয়া যায এবং তা বিশ্লেষণ করা যায়।

৭। প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা: রেওয়ামিল সকল হিসাবের জেরগুলো একত্রে থাকার জন্য এখান থেকে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থায় একটি মোটামুটি ধারণা নেয়া যায।

রেওয়ামিলের সুবিধা:

হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধাত যাচাই ও আর্থিক বিবরণীসমুহ প্রণয়নের সুবিধার জন্য রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হয। রেওয়ামিল তৈরির মাধ্যমে যেসব সুবিধা পাওয়া যায় তা নিম্নে আলোচনা করা হল:

১. ভুলত্রুটি উৎঘাটন: রেওয়ামিল তৈরির মাধ্যমে হিসাবের ভুল ত্রুটি উদঘাটন এবং তা সংশোধনের প্রয়োজনয়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায।

২. আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা: ব্যবসার আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা লাভ করার জন্য রেওয়ামিলে সকল হিসাবের উদ্বৃত্ত পাওয়া যায়

৩. সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা: সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে ব্যবসায়ীগণ রেওয়ামিল থেকে বিভিন্ন হিসাবের তথ্য পেয়ে থাকেন।

৪. গাণিতিক নির্ভূলতা যাচাই: রেওয়ামিলের দুইদিক সমান হলে হিসাবের গাণিতিক শুদ্ধতা সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া যায়।

৫. তুলনামুলক বিশ্লেষণ: রেওয়ামিলের মাধ্যমে বিভিন্ন বছরের হিসাবের উদ্বৃত্তের মধ্যে পারস্পরিক তুলনা করা যায।
৬. সময় ও শ্রমের অপচয় হ্রাস: রেওয়ামিলের মাধ্যমে আর্থিক বিবরণী প্রণয়নে সময় ও শ্রমের অপচয় হ্রাস পায়।

৭. দু তরফা দাখিলা পদ্ধতির ব্যবহা: রেওয়ামিলের দ্ইু দিক সমান হলে দু তরফা দাখিলা পদ্ধতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।
সুতরাং বলা যায় নানা ধরনের সুবিধার জন্য সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই তাদের আর্থিক বিবরণীসমুহ প্রস্তুতের পুর্বে রেওয়ামিল তৈরি করে থাকে।

রেওয়ামিলের ছক:

লেনদেনগুলোকে প্রথমে জাবেদায় লিপিবদ্ধ করা হয় এবং পরে সেগুলোকে হিসাবের বিভিন্ন খাত অনুযায়ী খতিয়ানে স্থানান্তর করা হয়। নিদির্ষ্ট হিসাবকাল শেষে খতিয়ানের সকল হিসাবের জের টানা হয় এবং খতিয়ানের ডেবিট জেরগুলোকে ডেবিট ঘরে ও ক্রেডিট জেরগুলোকে ক্রেডিট ঘরে একটি আলাদা কাগজে বা খাতায় লিপিবদ্ধ করে রেওয়ামিল প্রস্তুত করা হয়।

ANSWER SHEET

No comments

Powered by Blogger.